Logo
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামে করোনা হাসপাতালে বেশির ভাগ শয্যা ও যন্ত্রপাতি নষ্ট

করোনা
ছবি : প্রথম আলো

২০২০ সালে করোনা মহামারির শুরুতে আইসিইউ শয্যার অভাবে অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান।

এরপর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে বিশেষায়িত করোনা চিকিৎসার জন্য ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়। পরে সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮টি করা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশির ভাগ শয্যা ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আবারও করোনার বিশেষায়িত চিকিৎসা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ১৮টি শয্যার মধ্যে কেবল ১টি আইসিইউ শয্যার ভেন্টিলেটর সচল রয়েছে।

২০২০ সালে করোনা মহামারির শুরুতে আইসিইউ শয্যার অভাবে অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। এরপর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে বিশেষায়িত করোনা চিকিৎসার জন্য ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়। পরে সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮টি করা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশির ভাগ শয্যা ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়।

বর্তমানে আটটি শয্যায় রোগী ভর্তি করা গেলেও ভেন্টিলেটর সচল রয়েছে মাত্র একটিতে। সেটিও মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে পড়ে। অন্যগুলোর সঙ্গে কেবল অক্সিজেন সংযোগ থাকলেও জীবন রক্ষাকারী পূর্ণাঙ্গ সেবা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই।

গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে দুজন রোগী শয্যায় শুয়ে আছেন। শয্যাসংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি বিভাগের এক কোণে পড়ে আছে। শয্যার মনিটরগুলো সব বন্ধ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেরামতযোগ্য ভেন্টিলেটর ও যন্ত্রপাতির বিষয়ে অনেক আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে; কিন্তু এত দিন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন সংক্রমণ বাড়ার পর পাঁচটি শয্যা সচল করার চেষ্টা চলছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেরামতযোগ্য ভেন্টিলেটর ও যন্ত্রপাতির বিষয়ে অনেক আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এত দিন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন সংক্রমণ বাড়ার পর পাঁচটি শয্যা সচল করার চেষ্টা চলছে।

জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আইসিইউ শয্যাগুলো পরিদর্শন করে দেখা হচ্ছে কোনগুলো সচল করা যায়।

মেরামতের জন্য অধিদপ্তর থেকে লোক আসবেন। পাশাপাশি আইসিইউ চালাতে নতুন করে জনবল প্রয়োজন। কারণ, আগের অনেকে এখন নেই।

করোনা চিকিৎসায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অক্সিজেন সরবরাহ। ২০২০ সালে এখানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হয়, যা এখনো সচল রয়েছে। তবে হাইফ্লো নজেল ক্যানুলা ও অন্যান্য সরঞ্জাম নতুন করে লাগতে পারে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখন সবচেয়ে বড় সংকট জনবল। ২০২০ সালে করোনা ইউনিটের জন্য যে ২২ জন চিকিৎসক সংযুক্তি পেয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে বদলি করা হয়। এরপর আর কাউকে নিয়োগ

বর্তমানে ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের সংখ্যা থাকার কথা ১৭৭ জন (২০২৪ সালের কাঠামো অনুযায়ী)। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ৪২ জন। এর মধ্যে চিকিৎসা কর্মকর্তার পদ ২০টি।

এই ২০ চিকিৎসকের মধ্যে ৭ জন সহকারী রেজিস্ট্রার, ৬ জন জরুরি বিভাগে, ৫ জন বহির্বিভাগে এবং ১ জন করে প্যাথলজি, ইউনানি, ডেন্টাল ও কারা বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন।

তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন বলেন, ‘কোভিড নিয়ে প্রতিদিন সভা হচ্ছে। জনবল ও যন্ত্রপাতির বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছি, চিকিৎসা কার্যক্রম চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দ্রুত পাওয়া যাবে।’

গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে চারজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত ওই যুবক নগরের হালিশহরের বাসিন্দা।

গত মঙ্গলবার এপিক হেলথ কেয়ার রোগনির্ণয়ের কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখানে তাঁর করোনা পজিটিভ আসে।

এর আগে তিনজন করোনা রোগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুজন নারী। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবাই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নতুন করে করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। করোনা থেকে বাঁচতে ভিড় এড়িয়ে চলার পাশাপাশি মাস্ক পরিধানের পরামর্শ দেওয়া হয়।

২০২০ সালে প্রথম করোনার সংক্রমণ হয়। তখন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে সরকারি হিসাবে মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৫১৭ জন করোনা রোগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে মারা যান ১ হাজার ৩৭০ জন। এখন নতুন করে করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। নিউজ-প্রথম আলো


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেইজ