Logo
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

মার্শাল আর্ট আত্নরক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষা দুটোই কাজ করে : ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম

কে এম রাজীব : আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত আত্নরক্ষার কৌশল মার্শাল আর্ট খালি হাতে শত্রুর হাত থেকে যেমন নিজেকে রক্ষা করা যায় তেমনি মার্শাল আর্ট অনুশীলনে নিজের শরীরকে সুস্থ রাখা যায় বলে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের মার্শাল আর্টের জনক প্রথম জাতীয় প্রশিক্ষক প্রযোজক, পরিচালক ও নায়ক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, মার্শাল আর্ট শুধু শত্রু মোকাবেলায় নিজেকে রক্ষা করা যায় তা নয়, এ আর্ট চর্চার মাধ্যমে নিজের শরীরকে সুস্থও রাখা যায়। তাই পাঁচ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের স্কুল ভর্তির পাশাপাশি মার্শাল আর্ট চর্চা খুবই প্রয়োজন।

ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে খেলাধুলার তেমন কোনো স্থান না থাকায় প্রতিযোগিতা মূলক কোনো খেলা চোখে পড়ে না।

যার ফলে অনেক ছেলে মেয়েদের ক্রীড়ার তেমন বিকাশ ঘটে না। নিদিষ্ট ভাবে কোনো খেলাধুলায় অনেক ছেলে মেয়েদের অংশগ্রহণ না থাকায় তারা বিপথে চালিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হচ্ছে।

এসব ছেলে মেয়েদের যদি খেলাধুলা বা বিনোদনের দিকে ধাবিত করা হয়, তাহলে তারা অন্যায় কোনো কাজে জড়িত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

বিশ্বে ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, ব্যাডমিন্টন খেলা যেমন আন্তর্জাতিক ভাবে প্রতিযোগিতা মূলক এনং শরীর চর্চার একটি অংশ, তেমনি মার্শাল আর্টও আত্নরক্ষা কৌশল অনুশীলনের পাশাপাশি শরীর চর্চা, প্রতিযোগিতা মূলক খেলা ও বিনোদনের একটি অংশ।

তাই ছেলে মেয়েদের এবং যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে তাদের খেলাধুলা ও শরীর চর্চার মাধ্যম মার্শাল আর্টের প্রতি মনোযোগি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আমার প্রায় দুইশ’র মতো কারাতে ক্লাব রয়েছে যেখানে হাজার হাজার ছাত্র। আর প্রতি বছর ক্লাব গুলোর ছাত্র ছাত্রীদের অংশগ্রহণে জাতীয় ভাবে কারাতে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে ড্যান ও সনদ প্রদান করা হয়।

এতে ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে একটি বড় ধরনের উৎসাহ কাজ করে এবং মার্শাল আর্টের প্রতি তারা আরও মনোযোগী হয়ে বুকে ধারণ করে রাখে।

তাই আমি সকলের প্রতি আহবান জানাবো আত্নরক্ষা, সু-স্বাস্থ্য রক্ষায় মার্শাল আর্টে প্রতি মনোযোগী হয়।

উল্লেখ, চীন, জাপান, কোরিয়া সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে যখন মার্শাল আর্টের বিকাশ ঘটে সত্তর দশকে মিয়ানমার ( বার্মা ) থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশে মার্শাল আর্টের বিকাশ ঘটায় ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

পরবর্তীতে মার্শাল আর্টকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করতে প্রযোজক পরিচালক ও নায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সহযোগিতার প্রচারের মাধ্যমে হিসেবে বেছে নেয় চলচ্চিত্রকে।

এর পর তিনি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মার্শাল আর্ট প্রচার প্রসার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম এর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

যদিও প্রথমে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করলেও পরবর্তীতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়, চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।

চলচ্চিত্রে তাঁর রয়েছে বহু অবদান এবং চলচ্চিত্র শিল্পে রয়েছে তাঁর অসংখ্য শিষ্য। যারা মার্শাল আর্টে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যার মধ্যে মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মাসুম পারভেজ রুবেল, ড্যানি সিডাক, খালেদ মাহমুদ, মিশা সওদাগর, রোজিনা, রঞ্জিতা, মাসুকা আলম রাকা সহ আরও অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রী।

তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে, যাদু নগর, বিদ্রোহী, শরীফ বদমাশ, সোহেল রানা, মরণ লড়াই, মার্শাল হিরো, মাস্টার সামুরাই, পেশাদার খুনী, লড়াকু, কুংফু কন্যা, কুংফু নায়ক, প্রমিক রংবাজ সহ আরও অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে ও অভিনয় করেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেইজ