ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি পালনে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। যা শুরু হবে আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত থেকে।
বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপনে ৩৬ দিনব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু হবে ১ জুলাই প্রথম প্রহর অর্থাৎ ৩০ জুন রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ কর্মসূচির আয়োজন করবে।
ধারাবাহিক এ কর্মসূচির মধ্যে আছে- আলোচনা সভা, সেমিনার, বিজয় মিছিল, মৌন মিছিল, ছাত্র সমাবেশ, রক্তদান, গ্রাফিতি অঙ্কন, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকারবিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ ভিন্নধর্মী নানা আয়োজন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, সেদিন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি থাকায় ওই দিন বিএনপি কোনো কর্মসূচি রাখেনি।
সেজন্য ৩৬ দিনের তাদের কর্মসূচি শেষ হবে ৬ আগস্ট; সেদিন ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিল করবে বিএনপি।
বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচি
৩০ জুন রাতে ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ শহীদ মিনার।
১ জুলাই বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান। এই আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন।
৩ জুলাই দেশব্যাপী (জেলা পর্যায়ে) ড্যাবের উদ্যোগে রক্তদান কর্মসূচি।
৫ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ধানমন্ডি ক্লাব মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট।
৯ জুলাই বিএনপি নেতা ফারজানা পুতুল ও ‘মায়ের ডাকের’ সানজিদা তুলির তত্ত্বাবধায়নে সেমিনার।
১১ জুলাই জাসাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১২ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত পরিবারের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মতবিনিময় সভা।
১৪ জুলাই শহীদ মিনারে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ে অনুষ্ঠান।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান।
১৬ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে ’শহীদ’ ওয়াসিম ও ’শহীদ’ আবু সাঈদের স্মরণে চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছাত্র সমাবেশ।
১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রদলের উদ্যোগে আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের স্মরণে স্মরণসভা।
১৮ জুলাই ওলামা দলের উদ্যোগে দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল, দেশব্যাপী মৌন মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারন।
১৯ জুলাই বসুন্ধরার আইসিসিবি কনভেনশন সেন্টারে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভা।
২০ জুলাই সবুজ পল্ল¬বে স্মৃতি অম্লান (জিয়া উদ্যান ও সারাদেশে বৃক্ষরোপণ), কৃষক দল ও আমরা বিএনপি পরিবার এর উদ্যোগে কর্মসূচি পালন। গাছে ‘শহীদদের’ নাম লেখা থাকবে।
২১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পেশাজীবীদের অবদান নিয়ে আলোচনা সভা।
২২ জুলাই মহিলা দলের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান শীর্ষক কর্মসুচি।
২৩ জুলাই শাহবাগে ‘জুলাইয়ে লাশের সারি’ শীর্ষক প্রতীকী স্মৃতিস্তম্ভ প্রদর্শন এবং দৃক গ্যালারিতে ফ্যাসিস্ট কার্টুন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
২৬ জুলাই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ‘রোড টু জুলাই’ শিরোনামে গ্রাফিতি অঙ্কন ও গণসংগীত পরিবেশন অনুষ্ঠান।
২৭ জুলাই বিভাগীয় পর্যায়ে গ্রাফিতি অঙ্কন ও গণসংগীত পরিবেশন কর্মসূচি।
২৮ জুলাই স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে পানি ও ডোবা পরিষ্কারের কর্মসূচি এবং মায়ের ডাক ও আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ‘গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় শিশু’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
৩১ জুলাই আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালিত হবে।
২ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ‘পালাব না, কোথায় পালাব? শেখ হাসিনা পালায় না’ শীর্ষক পথনাটক এবং উত্তরা, রামপুরা, মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
৩ আগস্ট ছাত্রদলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করা হবে।
৪ আগস্ট যুবদলের উদ্যোগে কর্মসূচি নেওয়া হবে।
৬ আগস্ট বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে বিজয় মিছিল করা হবে।
কর্মসূচি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কায়সার কামাল, শিরিন সুলতানা, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু উপস্থিত ছিলেন।