আমাদের পৃথিবী ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, আমরা এমন এক সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি, যখন শান্তি ভঙ্গুর, উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সহযোগিতা সবসময় নিশ্চিত নয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জাপানের টোকিওতে ‘নিক্কেই ফোরাম: ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলন-২০২৫’ এ মূল বক্তার বক্তব্যে তিনি এ বলেন।
তিনি বলেন, আজ আমরা ‘অশান্ত বিশ্বে এশীয় চ্যালেঞ্জ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা করার জন্য এখানে সমবেত হয়েছি।
তাই আমি বলব, বিশ্ব ক্রমশ অশান্ত হয়ে উঠছে। আমরা এক বিরাট অনিশ্চয়তার সময় পার করছি। আমরা এমন একটি বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছি যেখানে শান্তি ভঙ্গুর, উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সহযোগিতা সর্বদা নিশ্চিত করা হয় না।
তিনি আরও বলেন, এশিয়া এবং তার বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত দেখা দিচ্ছে, শান্তি অধরা হয়ে উঠছে। যুদ্ধ এবং মানবসৃষ্ট সংঘাত ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে হাজার হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করছে।
আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ এক নৃশংস রূপ নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ইতোমধ্যেই গভীর মানবিক সংকটকে আরও গভীর অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। অতি সম্প্রতি, আমাদের দুই প্রতিবেশী একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যয়বহুল যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
দুঃখের বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছি যার ফলে আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ অনাহারে বা মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সংগ্রাম করছে।
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য আমি দুই দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই এবং দক্ষিণ এশিয়ায় অব্যাহত শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আশা করি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমার মনে কিছু বিশেষ স্মৃতি ফিরে আসে। বিশ বছর আগে, ২০০৪ সালে, নিক্কেই আমাকে এশিয়া পুরস্কারে ভূষিত করেছিলেন।
এটি আমার জীবনের একটি অত্যন্ত অর্থপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। তারপর থেকে, আমি সর্বদা জাপানের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত সংযোগ অনুভব করেছি। বছরের পর বছর ধরে, আমি বহুবার জাপানে গিয়েছি। আমি জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করেছি, তরুণদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং ধারণাগুলো ভাগ করে নিয়েছি।
জাপানের জনগণ সামাজিক ব্যবসা এবং ক্ষুদ্রঋণের আমার ধারণাকে কতটা উষ্ণভাবে গ্রহণ করেছে তা দেখে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত।