স্বপ্ন ছিল স্বামীর সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার। যে কারণে বিমানে উঠেছিলেন সদ্য বিবাহিত খুশবু রাজপুরোহিত। কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই সেই স্বপ্ন তছনছ হয়ে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায়।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি লন্ডনগামী ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়।
২৪২ আরোহী নিয়ে আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি মেঘানি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় অধিকাংশ যাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ফ্লাইটেই ছিলেন রাজস্থানের বালোতারা জেলার আরাবা গ্রামের মেয়ে খুশবু রাজপুরোহিত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিয়ে হয় লন্ডনে অধ্যয়নরত মানফুল সিংয়ের সঙ্গে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বিয়ের পর এটি ছিল খুশবু ও মানফুলের প্রথম দেখা হওয়ার সুযোগ—যা আর হয়ে উঠল না।
খুশবুর বাবা মদন সিং রাজপুরোহিত স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, মেয়ের সঙ্গে শেষ কথাটিও বলতে পারেননি তিনি। পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
দুর্ঘটনায় সবাই নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হলেও নতুন একটি মোড় নিয়েছে এই ঘটনা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় এক যাত্রী বেঁচে আছেন বলে নিশ্চিত করেছে আহমেদাবাদ পুলিশ।
ওই যাত্রী বিমানের ১১এ সিটে ছিলেন এবং তাকে কিছুটা পোড়া কাপড়ে ‘হেঁটে বের হতে’ দেখা গেছে। যদিও তার পরিচয় বা শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এর আগে এনডিটিভি ও বিবিসি জানায়, বিমান দুর্ঘটনায় কেউ জীবিত নেই বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আহমেদাবাদ পুলিশের কমিশনার জিএস মালিক বলেন, উড়োজাহাজে থাকা কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। বিমানটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হওয়ায় কিছু স্থানীয় বাসিন্দারও মৃত্যু হতে পারে।
বিমানটি আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। ফ্লাইটটিতে ২৩২ জন যাত্রী ও ১০ জন কেবিন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা শুধু একটি দেশের নয়, বহু পরিবারের কাছে হয়ে উঠেছে এক চিরস্থায়ী বেদনার স্মারক। সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি, ইন্ডিয়া টুডে