সিএসপি ডেস্কঃ
পবিত্র রজমান মাসে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মানুষকে কষ্ট দেয়, সেসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাবকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ মার্চ) কুর্মিটোলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদরদপ্তরে সংস্থাটির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজান হচ্ছে সংযমের মাস। সংযমকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা সংযমতার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে পড়ে। যে পণ্যগুলো আমাদের প্রয়োজন সেগুলো মজুত করে রাখা, সেগুলো দাম বৃদ্ধি করা, নানারকম কারসাজি করে থাকে। এই অসাধু ব্যবসায়ী এবং পাশাপাশি যারা চোরাকারাবরি তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদ সামনে আসলেই জাল মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়। সেসব বিসয়ে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। যদিও এর ওপর অভিযান চলছে, এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমনে র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ঘোষণা দিয়েছিলাম, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নেবো। আমি ধন্যবাদ জানাই, রাবের সব সদস্যকে, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। জঙ্গিবাদ দমনে তারা বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন, এজন্য র্যাবের সব সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, দেশে জঙ্গিবাদের একটি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তা আমরা মোকাবিলা করেছিলাম। সেটি হলি আর্টিজানের ঘটনা। এরপর থেকে আমাদের দেশে কিন্তু আর কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারেনি। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষ করে র্যাবের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার জন্য আমি প্রশংসা করি।আমাদের অনেক সমস্যা ছিলো। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্র, মাদক, চরমপন্থী, জলদস্যু ও বনদস্যু। একে একে প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় অ্যাকশন নিয়ে, কিছু জায়গায় বুঝিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিন্তু সাফল্য অর্জন করেছি। আজকে সুন্দরবন বনদস্যুমুক্ত হয়েছে। যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি বড় দেশ হঠাৎ করে র্যাবের ওপর স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিলো। বিশেষ করে র্যাবের ডিজিসহ কর্মরত অনেকের ওপর। সেখানে আমার প্রশ্ন ছিলো, যারা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, জলদস্যু, বনদস্যু-এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা বা মানুষের অধিকার রক্ষায় যারা কাজ করেছে তাদের ওপর কিভাবে স্যাংশন আসে? তাদের অপরাধ কি?
কেউ যদি অপরাধ করে কেউ তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সে যেকোনো সংস্থার লোকই হোক তাকে আমরা আইনের আওতায় আনি এবং আমরা তার বিচারও করি, ভবিষ্যতেও হবে। দেখতে হবে তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে কি না। তারা দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যখন কোনো অপরাধী শনাক্ত করবে, ধরবে আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আর সেজন্য আরেকটা দেশ এসে স্যাংশন দেবে এটা আমাদের কাছে কখনও গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে প্রথমে অনেকে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম স্যাংশন কখনও একতরফা হয় না। দরকার হলে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি। সেই অধিকারও আমাদের রয়েছে। এই দেশটা আমাদের। রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলো তারা পারেনি। সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হয়েছিলো কিন্তু আমেরিকার জনগণ সেটা করতে দেয়নি, কোর্টে তারা বাধা দিয়েছিলো।
এ সময় প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত এটা পরিচালিত করতে হবে, যাতে সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং এজন্য কারিগরি প্রযুক্তিসহ সব ধরনের ব্যবস্থা সরকার করে যাবে।
জনগণের নিরাপত্তা দিতে র্যাবের সদস্যারা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আরও দায়িত্বশীল কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সিএসপি/বিআরসি