নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে নগরের থিয়েটার ইন্সটিটিউটে চসিকের বর্তমান (ষষ্ঠ) পর্ষদের মেয়র হিসেবে নিজের চতুর্থ বাজেট ঘোষণা করলেন তিনি।
এ সময় মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশন সুদীর্ঘকাল ধরে নগরবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর কার্যকর সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকার এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৬ষ্ঠ পরিষদ দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা দেনা নিয়ে। তিন বছর ধারাবাহিকভাবে দেনা পরিশোধের পর আজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দেনার পরিমাণ ৪৪০ কোটি টাকা। আয়কর বাবদ ১১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ ১৩৪ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা কর হয়েছে। আনুতোষিক বাবদ ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা ও ভবিষ্যৎ তহবিল বাবদ ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
এদিকে, গত অর্থবছরের মতো এবারের বাজেটেও উন্নয়ন অনুদান ও গৃহকর আদায়কে আয়ের মূল খাত দেখিয়ে এ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে চসিক। এরমধ্যে এবারের বাজেটে নিজস্ব উৎসে সর্বোচ্চ আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর উন্নয়ন অনুদান খাতে ৯০৯ কোটি টাকার আয় ধরা হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটের পাশাপাশি গত (২০২৩-২৪) অর্থবছরের ১ হাজার ৬৬১ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করা হয়। ওই অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৮৮৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৮ শতাংশ। যা চসিকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে জানায় চসিক। যেখানে এর আগের অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয় মাত্র ৫৪ দশমিক ৪২ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তিন ধরনের কর বাবদ মোট আয় ধরা হয়েছে ৬৭১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এরমধ্যে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে সর্বোচ্চ আয় ধরা হয়েছে ২৩৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। হাল কর ও অভিকর খাতে ২৩২ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর বাবদ ২০০ কোটি ১৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে।
একইভাবে গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) তিন ধরনের করে মোট আয় ধরা হয়েছিল ৬৪০ কোটি ৫ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুসারে এ তিন ধরনের কর খাতে চসিকের আয় হয়েছে ৪১৫ কোটি ৭ লাখ টাকা।
এছাড়া, প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে ৯০৯ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। গত অর্থবছরে এই খাতে আয় দেখানো হয় ৮৯৪ কোটি টাকা। কিন্তু উন্নয়ন অনুদান খাতে আয় হয়েছে ৯৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে প্রস্তাবিত বাজেটে ৩৮ কোটি ৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়। একইসঙ্গে উন্নয়ন খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যেখানে গত অর্থ বছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ৯৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয় ১ হাজার ১৫ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব শেখ মো. আশরাফুল আমিনের সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল। এ সময় সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
সিএসপি/বিআরসি