সিএসপি ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, পাকিস্তানিরা ৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। যে পাকিস্তানীরা আমাদের গুলি করে হত্যা করেছিল, আজ সেই পাকিস্তানেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মাতৃভাষার জন্য পৃথিবীর আর কোনও রাষ্ট্র এত আন্দোলন করে নাই, রক্তও দেয় নাই। সেই জন্য ১৯৯৬ সালে সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, ছয় দফা আন্দোলনের সূচনা চট্টগ্রাম থেকে হয়েছে, দেশের স্বাধীনতায় চট্টগ্রামের ভূমিকা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম প্রচার হয় এই চট্টগ্রামের বেতার থেকে। ছয় দফা আন্দোলনের সূচনা হয়েছে এই চট্টগ্রাম থেকে। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনেও চট্টগ্রামের অবদান অনেক।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির কথা ভেবে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তান সৃষ্টির পর যখন ৫৬ ভাগ মানুষের ভাষাকে তারা (পাকিস্তান) স্বীকৃতি দিতে চায়নি, তখনই বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন এদেশে পাকিস্তানি শোষণ চলবে। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির কথা ভেবে, তিনি ১৯৪৮ সালেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে ৬৬’র ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। আমরা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চু, চট্টগ্রাম-৪ আসনের এমপি এসএম আল মামুন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, নগরের উত্তর কাট্টলীতে ৪৫ শতক জায়গার উপর প্রস্তাবিত নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের জায়গায় অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে প্রথমবারের মতো বীর শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে সেখানে।
সিএসপি/বিআরসি