সাতকানিয়া প্রতিনিধি:
সাতকানিয়ার আমিলাইশ ইউনিয়নের সরওয়ার বাজারে ধান চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ দিতে হলো মো. মহিউদ্দিন (৩২) নামে এক লেগুনা পিকআপ চালককে।
বুধবার (২৯ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনিতে নিহত পিকআপ চালক উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সরদারপাড়া এলাকার লম্বা কালুর বাড়ির আলি আহামদের বড় ছেলে বলে জানা গেছে।
আমিলাইশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক চৌধুরী সিএসপি নিউজকে বলেন, ক্ষেত থেকে ধান মাড়াই করার পর শুকানোর জন্য রাস্তার পাশে ধান রাখা হয়েছিল, তবে পূর্বে ধান চুরি হওয়ার কারণে পাহারারত লোকজন এমন সময় পিকআপে ধানের বস্তা তুলতে দেখে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। এ সময় পিছনে থাকা চোরের দল পালিয়ে গেলেও পিকআপ চালককে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বাবা আলি আহামদ সিএসপি নিউজকে বলেন, আমার ছেলে পিকআপ চালায়, কে বা কাহারা মাগরিবের পর ধান আনতে হবে বলে আমার ছেলের গাড়িটা ভাড়া করে নিয়ে যায়। এশার নামাজের পর আমিলাইশ থেকে ফোন করে বলা হয় এখানে গাড়ির পাশে লাশ পড়ে আছে।
১৭ দিন আগে আমার ছেলের জন্য বউ এনেছি এখনো মেহেদীর রঙ শুকায়নি এরই মাঝে আমার ছেলেটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।
ছদাহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, নিহত পিকআপ চালক মো. মহিউদ্দিন আমার এলাকার আলি আহমদের ছেলে। তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে আমি ব্যাক্তিগতভাবে চিনি, সে কখনো এই ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেনা।
সে না জেনে হয়ত ভাড়ায় গিয়েছিল। আর চোরের দল পালিয়ে গেলেও সে গাড়িতে বসা ছিল। তাই তাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে। এটি একটি অমানবিক ঘটনা।
সাতকানিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, আমিলাইশ সরওয়ার বাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের নির্মাণাধীন ভবনে স্থানীয় লোকজন ধান কেটে শুকানোর জন্য রেখেছিলেন। এক সপ্তাহ পূর্বেও সেখান থেকে ২০ বস্তা ধান চুরি হয়েছিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা পাহারা বসিয়েছিল। এমতাবস্থায় চোরের দল পাঁচবস্তা ধান গাড়িতে তুললে এসময়ে পাহারায় থাকা লোকজন এগিয়ে আসলে চোরের দল পালিয়ে যায়। পরে গাড়িতে থাকা চালককে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সিএসপি/বিআরসি