Logo
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৯ অপরাহ্ন

বিদেশে কিশোরী পাচারের ঘটনায় গ্রেপ্তার-৩

বিদেশে পাচার করার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে আটকে রাখা ১৩ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো নোয়াখালীর লক্ষীপুরের বাসিন্দা আল আমিন (২৮), বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট ও শরীয়তুপরের বাসিন্দা ‍সুইটি (২৭) এবং যুথী বেগম (২৪)। ভিকটিমের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম সাদিয়া আক্তার তানহা (১৩) গত পহেলা জানুয়ারি বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাট থেকে নিখোঁজ হয়। যে ঘটনায় ভিকটিমের মা জান্নাত বেগম বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় ৯ জানুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরির সূত্রধরে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারি ভোররাত আড়াইটার দিকে অপহরণকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এর আগে পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বুধবার সন্ধ্যায় ভিকটিমকে বরিশাল নগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের খালেক মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর ভিকটিম জানায়, গত পহেলা জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে তার মায়ের খালা নারগিসের বাসা থেকে নানাবাড়ি শায়েস্তাবাদের চর হবিনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাট এলাকায় পৌঁছালে গ্রেপ্তার সুইটি ও ‍যুথী বেগম কৌশলে ভিকটিমকে সিএনজি চালিত থ্রি হুইলারে উঠিয়ে অপহরণ করে বরিশাল শহরের ভাটিখানা এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় পতিতাবৃত্তি ও যৌন শোষণের জন্য দুবাই পাঠানোর মর্মে আটকে রাখে। এরপর ২ জানুয়ারি ভিকটিমকে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট করার জন্য ঢাকায় নিয়ে নকল ভোটার আইডি কার্ড করে। এরপরের দিন ভিকটিমকে বরিশাল পূর্বের বাসায় নিয়ে এসে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এরপর ৫ জানুয়ারি ভিকটিমকে পুনরায় ঢাকায় নিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে বরিশালে নিয়ে এসে আটকে রাখে।

পুলিশ জানান, মূলত ভিকটিম রাগ করে বাস থেকে বের হয়েছিল। আর এই সুযোগে চক্রটি ফাঁদে সে পা দেয়। চক্রটি অসৎ উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে বিদেশে পাচার করার জন্য বিভিন্ন আয়োজন সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় ভিকটিমকে উদ্ধারের উদ্ধারের পাশাপাশি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। এরা একে অপরের কি হয় সে বিষয়েও স্পষ্ট হওয়া যায়নি। তবে গ্রেপ্তার দুজন নারী সৌদি আরবে নাচ-গান করতো বলে আমাদের জানিয়েছে। সেইসাথে এদের মধ্যে একজন বিদেশ থেকে বছর খানেক আগে আরেকজন তিন মাস পূর্বে এসেছে। পুলিশ বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে গ্রেপ্তারকৃতদের সাথে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এরা ভিকটিমকে বিদেশে পাচারের জন্য অল্প সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট করার কার্যক্রম হাতে নিয়ে ঢাকাতেও নিয়ে গিয়েছিল। অভিভাবকের সাধারণ ডায়েরির সূত্রধরে আমরা তদন্তে নেমে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছিলাম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেইজ