সিএসপি ডেস্ক:
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে কাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ)সিদ্ধান্ত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। আবেদনে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। পরে সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য পরিবারের আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে এই চিঠিতেও তারা আগের মতোই স্থায়ী মুক্তি চেয়েছেন। আমি বুঝলাম না স্থায়ী মুক্তি মানে কী? এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছেন। আমরা কাছে আজকে আমার সচিব ফাইলটা দিয়েছেন। ওনারা (খালেদার পরিবার) কী আবেদন করেছেন, সেটা দেখে ভালো করে বিবেচনা করে আমি অতি সত্বর নিষ্পত্তি করব। আগামীকাল (মঙ্গলবার) নাগাদ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, ফাইলটা আজকেই পেয়েছি। আমাকে বিবেচনা করতে হবে, পড়তে হবে, আমাকে দেখতে হবে। তবে একটা বিষয় বলতে পারি সেটা হলো খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না।
মন্ত্রী বলেন, একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। আমি বহুবার আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছি, যে শর্তে তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এর বাইরে আইনিভাবে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু এরপরও প্রত্যেকবার দেখছি, প্রথম যেভাবে চিঠি দেয়া হয়েছিল সেই আকারেই তারা আবেদন করছেন।
আনিসুল হক বলেন, আমরা আগের আইনি ব্যাখ্যায় যেটা স্পষ্টভাবে দাড়ায় তা হলো- বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না। তার মানে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে তাকে চিকিৎসার করার অনুমতিও আমরা দিয়েছিলাম। ডাক্তার তাকে চিকিৎসা করেছেন, সুস্থও করেছেন।
সরকার প্রধান চাইলে খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ৪০১ ধারায় সরকার প্রধান মানে প্রধানমন্ত্রী। প্রথমবার তিনি যখন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন, এখন সেটি পরিবর্তন করার আইনি বিধান নেই। এটির পুনঃনিষ্পত্তি করার কোনও অবকাশ নেই। আইনের বাইরে গিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মানবিকতা দেখাতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী মানবিকতা প্রথমবারই দেখিয়েছেন। এই যে বার বার রিনিউ হচ্ছে, সেটাও মানবিক কারণ থেকেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, মেয়াদ বাড়ানোর আইনি সুযোগ আছে। অন্য কিছু করার আইনি সুযোগ নেই। খালেদা জিয়া কিন্তু দুটি শর্তে (বিদেশে যেতে পারবে না ও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা) মুক্ত। চলাফেরায় তার কিন্তু কোনো অনুমতি নিতে হয় না। তাই তাকে আবার মুক্তির কথা বলাটা মনে হয় অপ্রাসঙ্গিক।
জানা গেছে, এরআগে ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না-এ দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আটবার বাড়ানো হয়েছে। এবার বাড়ানো হলে নয়বারের মত খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়বে।
সর্বশেষ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে।
সিএসপি/বিআরসি