সিএসপি ডেস্ক:
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার অসহায়দের সেবা না দিয়ে সেই টাকা নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমাতেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ।
সোমবার (৬ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মানবপাচার মামলায় মিল্টন সমাদ্দারকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়ার বিষয় জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা তাকে আরও চার দিনের রিমান্ডে এনেছি। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মিল্টন তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে অনাথ শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে পুঁজি করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আসছিল। সেসব টাকা অসহায়দের সেবা না দিয়ে ব্যাংকে তার নিজের অ্যাকাউন্টে জমাতেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ও লোহমর্ষক তথ্য পেয়েছি। সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানাবো।
এসময় সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মিল্টনের আশ্রমে যে কয়েকজন অনাথ শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ আছে তাদের সহায়তা করতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বলেছি। তিনি হলেন আলহাজ্ব সামছুল হক ফাউন্ডেশনের কর্নধার। গতকাল তিনি আমাদের কাছে এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি তার ফাউন্ডেশন যেন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমে যারা আছে তাদের খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যয়ভার আপাতত দেখভাল করে।
শিশু পাচারের অভিযোগে মিল্টন কি তথ্য দিয়েছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, তার কাছ থেকে আমরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। সব তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। আমরা মনে করি এসব অভিযোগের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
মিল্টনের মাদক সেবনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিল্টন নিজেই স্বীকার করেছে সে ইয়াবা সেবন করে। তার টর্চার সেলে অত্যাচার করা হত। আমি মনে করি মাদকাসক্ত ছাড়া একজন মানুষ এভাবে কাউকে পেটাতে পারে না।
চিকিৎসকদের সই-সিল নকল করে মৃত্যু সনদ বানিয়ে জানাজা ছাড়া কোথায় কাকে কবর দিয়েছেন সেসব তথ্য মিল্টন স্বীকার করা শুরু করেছে বলেও জানান ডিবি প্রধান।
অজ্ঞাত মরদেহ দাফনের ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেছে কি-না জানতে চাইলে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, মিল্টনের মাঠ পর্যায়ে লোক রয়েছে। তারা বয়স্ক, বাকপ্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের সংগ্রহ করে তার কাছে নিয়ে আসত। ফলে এই মানুষগুলোর আত্মীয় স্বজনদের তথ্য কেউ জানে না। এই সুযোগ সে কাজে লাগিয়ে ইচ্ছামত কাজ করত।
সিএসপি/বিআরসি