নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই পুলিশ কর্মকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে কোনো নাগরিকের ওপর হামলা হলে তাঁর অভিযোগ আমলে নিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।
তারপরও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বেড়েছে। তার মধ্যে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে মামলা করার জন্য থানায় গেলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের টাকা না দিলে থানায় মামলা গ্রহণ করা হয় না। ফলে চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা বাধ্য হচ্ছেন আদালতে শরণাপন্ন হচ্ছেন।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যা এলাকার ধন গাজীর বাড়ী মোঃ নুরনবী ছেলে মোঃ শাহীন (২০)এর উপর গত ০১/৫/২০২৩ তারিখ রাত ৯ ঘটিকার সময় এলাকার সন্ত্রাসীরা উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
উক্ত ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় মোঃ শাহিন কে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাহার পিতা নুরনবী কর্ণফুলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্ণফুলী থানার এএসআই নোমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরও মামলা রুজু করার জন্য মামলার বাদীকে থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মেহেদী হাসানের জন্য বিশ হাজার টাকা নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন।
বিষয়টি ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট আত্মীয় প্রতিবেদককে জানানোর পর কর্ণফুলী থানার এস আই নোমানকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে এবং এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মামলার রেকর্ডের কপি নেওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার রাত আটটা হইতে বারোটা পর্যন্ত মামলার বাদি নুরুন্নবী কর্ণফুলী থানায় অবস্থান করলেও ওসি তদন্ত ও এস আই নোমান বাদি নুরুন্নবীকে পরে যোগাযোগ করার বেরিয়ে যান।
রাত বারোটার পর বাদী নুরুন্নবী ও তার নিকট আত্মীয় প্রতিবেদককে ফোন করে জানান টাকা না দেওয়ার কারণে কর্ণফুলী থানার এ এস আই নোমান ও ওসি তদন্ত মেহেদী হাসান টাকা না পাওয়াই মামলা রেকর্ড করে নাই।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার বন্দর শাকিলার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি প্রতিবেদককের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন কোন ভুক্তভোগী যাতে থানায় কোন প্রকার টাকা পয়সা লেনদেন না করে এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুক্তভোগী শাহিনের পিতা নুরনবী প্রতিবেদককে জানান আমার ছেলেকে হামলার ঘটনায় মামলা না নেওয়া ও মামলার জন্য টাকা চাওয়ায় বিষয়টি আমি আমার নিকট আত্মীয়র মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ও উপ পুলিশ কমিশনার বন্দরকে অবহিত করার পর অদ্য বুধবার বেলা বারোটার সময় কর্ণফুলী থানার সেকেন্ড অফিসার আরঙ্গজেব রাত আটটায় ওসি থানায় আসলে মামলা রেকর্ড এর কপি নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।
টাকা না পাওয়া কারণে মঙ্গলবার রাত্রে মামলা রেকর্ড করেন নাই এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিযুক্ত কর্ণফুলী থানার এস আই নোমান প্রতিবেদককে জানান ওসি তদন্ত মামলা রেকর্ড করার জন্য সেকেন্ড অফিসারকে নির্দেশ দেওয়ার পরও তিনি মামলা রেকর্ড করেন নাই। তিনি আরো বলেন আমি পক্ষ থেকে কোন প্রকার টাকা পয়সা চাইনি, সেকেন্ড অফিসার কাজের চাপে মামলা রেকর্ড করতে পারে নাই। সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্বের অবহেলার কারণে আমার আমাদের বদনাম হচ্ছে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার সেকেন্ড অফিসার খন্দকার আওরঙ্গজেব এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককের জানান হামলার ঘটনায় আজ বুধবার কর্ণফুলী থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা নাম্বার ০৭। তিনি আরো জানান শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি আরো জানান মামলা রেকর্ড করার জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করার বিষয়টি তিনি অবগত নয়। এস আই নোমান ও বাদী পক্ষের মধ্যে কি কথা হয়েছে তিনি জানেন না উল্লেখ করেন।