Logo
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সকলের পরিচয় শনাক্ত

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় যাত্রীবাহী বাস ও দুই মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১০ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩ নারী, ২ শিশু ও ৫ জন পুরুষ রয়েছেন।

দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশ নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে বুধবার (২ এপ্রিল) রাতে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

হাইওয়ে পুলিশের তালিকা অনুযায়ী নিহতরা হলেন- ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকার দুলাল বিশ্বাসের ছেলে দিলীপ বিশ্বাস (৪৩), দিলীপ বিশ্বাসের স্ত্রী সাধনা মন্ডল (৩৭), দিলীপের শ্বশুর আশীষ মন্ডল (৫০)।

ঢাকার ঢাকার মিরপুরের আব্দুল জব্বারের ছেলে রফিকুল ইসলাম শামীম (৪৬), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী লুৎফুন নাহার সুমি (৩৫), বড় মেয়ে আনিসা (১৬), ছোট মেয়ে লিয়ানা (০৮), মৃত রফিকুল ইসলামের ভাগিনা তানিফা ইয়াসমিন (১৬), মামা মুক্তার হোসেন (৬০) ও মাইক্রোবাস চালক ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকার কালা মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ আলী (৫৫)।

এ ঘটনায় আহত চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো তিনজনেরও পরিচয় মিলেছে।

তারা হলেন-ঢাকার বাসিন্দা মৃত রফিকুল ইসলাম শামীমের মেয়ে প্রেমা (১৮)।ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকার মৃত দিলীপ বিশ্বাসের শিশু কন্যা আরাধ্যা বিশ্বাস (৭), মৃত দিলীপ বিশ্বাসের চাচাতো শ্যালক দুর্জয় মন্ডল (১৮)।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগড়া চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় রাস্তার একটি মোড় এবং লবণবাহী একটি গাড়ির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে মরদেহগুলো হাইওয়ে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। ঈদের দিন (৩১ মার্চ) দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন।

পরদিন (১ এপ্রিল) একই স্থানে দুটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৯ জন আহত হন। একাধিক দুর্ঘটনার কারণে এ স্থানটি এখন চিহ্নিত ‘রেড জোন’ হিসেবে।

এদিকে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক বলেছেন, সড়কে কী অসঙ্গতি আছে তা সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখতে বলেছি। তারা এখানে আছেন। ওনারা দেখে দ্রুততম সময়ে করণীয় নির্ধারণ করে জানাবেন।

তিনি বলেন, এখানে যে বেপরোয়া গাড়ি চলছে, এগুলোর স্থান চিহ্নিত করে বিভিন্ন জায়গায় যথাযথ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা দরকার। সেটার জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, আমি বলে যাচ্ছি।

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ঘটা দুর্ঘটনাস্থল বিকেলে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা ফারুকী আজম আরো বলেন, দীর্ঘসময় ধরে বারবার এখানে দুর্ঘটনা হচ্ছে, শুধু এখানে নয়, এই সড়কের অন্য অংশেও।

চট্টগ্রাম থেকে আমাদের কক্সবাজার যেতে হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগছে। আর ঢাকার লোকের ফ্লাইটে করে আধা ঘণ্টায় কক্সবাজার পৌঁছাচ্ছে। এটা একটা ডিসক্রিমিনেশনও (বৈষম্য) বটে। এগুলোরও অবসান হওয়া উচিত।

অপরদিকে, দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে বিআরটিএর পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং সরকারিভাবে আরো ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।

এর আগে, বুধবার সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া চুনতি বনরেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ভয়াবহ সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেইজ