চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দেখে চেনার উপায় নেই যে এটি দেশের অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠের ফটক।ছাত্রলীগের পোস্টার, মাইজভান্ডার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়,বিভিন্ন স্কুল, কলেজের, ও অন্যান্য পোস্টারে ছেয়ে গেছে চবির মূল ফটক(১ নং গেট)।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভবনের দেয়াল ও ভরে আছে পোস্টার,ব্যানার ও চিকায়।আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া পোস্টার ও দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ হলেও তা মানছে না কেউ।এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
অপরূপ সৌন্দর্য্যের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাহাড় আর জঙ্গলে বাদে বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন,আবাসিক হল সহ অন্যান্য সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় দীর্ঘদিন থেকে এসব ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন টাঙিয়ে রাখা ও চিকা মারার ফলে সৌন্দর্য হারাচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।তারা আরো বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া যেহেতু ক্যাম্পাসে পোস্টার বা ব্যানার রাখার নিয়ম নেই।তাহলে কিভাবে এতো পোস্টার লাগানো হয়েছে আর কেনই বা এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ‘যা শিক্ষার্থীদের কাছে ১ নং গেট নামে পরিচিত’ ছেয়ে আছে মাইজভান্ডার,ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের,বিভিন্ন ক্লিনিক,বাসা ভাড়া সহ নানান পোস্টারে। সেখান থেকে এসে ক্যাম্পাসে জিরো পয়েন্টেও একই চিত্র।আশেপাশের দেয়াল ভোরে আছে পোস্টার আর চিকায়।গাছে গাছে বেঁধে দেওয়া হয়েছে কাপড়ের ও ডিজিটাল বিভিন্ন ব্যানার।লাইব্রেরি,চাকসু, এমনকি নির্মাণাধীন ভবন ও বাদ যায়নি,হলের ডাইনিং, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঝুপড়ি ও হোটেল গুলো ও ভরে আছে পোস্টার ও চিকায়।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী মদিনা ইয়াসমিন মেঘলা আজকালের খবরকে বলেন,’আমি প্রথমে বাস থেকে নেমে মানতে পারছিলাম না এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট।আমার মনে হচ্ছিল এটা একটা রাজনৈতিক কার্যালয় আর এখানে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চলছে।’
তিনি আরো বলেন,আমি পুরো ক্যাম্পাসে ঘুরে প্রায় সবখানে একই চিত্র দেখেছি।পোস্টার ব্যানারের কারণে চবি সৌন্দর্য অনেকটা অপ্রকাশিত থাকছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল-মামুন শান্ত বলেন,দীর্ঘদিন থেকে মূল ফটকের এই অবস্থা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এগুলো অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয় না।দ্রুত সৌন্দর্যহানিকর সব ধরনের পোস্টার ও ব্যানার সরিয়ে ফেলা উচিত।
এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ আজকালের খবরকে বলেন,পলিটিকাল যে ব্যানার বা পোস্টার আছে,সেগুলো নির্দিষ্ট কয়েকটা জায়গায় আছে।আমার মনে হয় না বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্টের জন্য এই পোস্টার গুলো খুব একটা দায়ী বলে।
তিনি আরো বলেন,রাজনৈতিক পোস্টার গুলো সুশৃঙ্খল ভাবে লাগানো হয়।কিন্তু অন্যান্য বিভিন্ন স্কুল কলেজের বিজ্ঞাপন, বাসা ভাড়া,কোম্পানি, টিউশন সেবা ইত্যাদির বিজ্ঞপ্তি গুলো যত্রতত্র লাগানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হারাচ্ছে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সিদ্ধান্ত ছিল; ব্যানার-ফেস্টুন এভাবে রাখা যাবে না। বোর্ডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যানার রাখার নিয়ম আছে। প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া কোথাও তো ব্যানার-পোস্টার লাগানো যায় না।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(চবি) একাধিক প্রশাসনিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।