সিএসপি ডেস্কঃ
রাজধানী বেইলি রোডের সেই কাচ্চি ডাইনের ট্র্যাজেডিতে নিহত শুল্ক কর্মকর্তা শাহ জালাল ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চিরশায়িত করা হয়েছে। জানাজায় সর্বস্তরের শোকার্ত মানুষের ঢল নামে।
রোববার (০৩ মার্চ) সকাল ১১ টায় কক্সবাজারের মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার আগে সকালে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁদের এক নজরে দেখতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে চলে স্বজনদের আহাজারি। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি সাধারণ মানুষও। সবার বুকে ছিল পাহাড়সম পাথর। ব্যথিত হৃদয়ে ক্ষণজন্মা শাহ জালাল ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে চির বিদায় দেন সবাই। এসময় সবার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আর যেন কোন বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। সরকারকে এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবা উচিত।
উল্লেখ্য, শুল্ক কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন স্ত্রী মেহেরুন নিসা ও একমাত্র মেয়ে চার বছরের শিশু ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে নিয়ে থাকতেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাস্টম কোয়ার্টারে।
কক্সবাজারে বাড়িতে আসার জন্য দুদিনের ছুটি নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। বাড়ির পথে রওনা হওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে তিনি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের একটি রেঁস্তোরায় যান।
আগুনে পুড়ে সেখানেই তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে জীবিত অবস্থায় আর ফেরা হলো না আপন নিবাস কক্সবাজারে। স্ত্রী–সন্তানসহ নিথর দেহে কক্সবাজারে ফিরেছেন তিনি।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহজালালের স্ত্রী মেহেরুন নিসার রামুর গ্রামের বাড়ি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে পৌঁছায় তাদের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স।
তাদের মরদেহ কক্সবাজার পৌঁছার পর সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়। ওই রাত সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা।
এরপর মরদেহ নেওয়া হয় শাহজালালের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের হলদিয়াপালংয়ে। রোববার সকাল ১১টায় মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত করা হয় তাদের।
জানাজার পূর্বে তাঁদের আলোকিত জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি, নিহত শাহ জালালের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, উখিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েসসহ স্থানীয় আওয়ামী ও পরিবারের সদস্যরা।
সিএসপি/বিআরসি