নতুন কৌশলে চট্টগ্রামে ঢুকছে বিভিন্ন ধরনের মাদক, ফলে কোনোভাবেই দমানো যাচ্ছে না মাদকের এই বিস্তার। চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সারা দেশে সরবরাহ হয়। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নানামুখী তৎপরতার কারনে মাদক কারবারিরা প্রতিদিনিই মাদক পরিবহনের জন্য বিভিন্ন রুট বদল করে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কম নজরদারির কারণে তারা এখন নৌ ও রেলপথ কে চট্টগ্রামে মাদক পরিবহনের প্রধান রুটে হিসাবে ব্যাবহার করছে।
আর এই সুযোগে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন নতুন রেলষ্টেশন ও পুরাতন রেলষ্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি আজ এক মাদক সম্রাজ্ঞীর মাদকের কালো থাবার দখলে। চট্টগ্রামের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি এখন পুরোপুরি পরিনত হয়েছে জুয়া, মাদক, ছিনতাই ও মোবাইল চোরের হটস্পট। তাছাড়া জুয়ার, ছিনতাই, মাদকের পাশাপাশি প্রকাশ্যে চলছে অশালীন ব্যবসা। প্রাপ্ত বয়স্করাতো আছেই অত্র এলাকার উঠতি বয়সি যুবকরাও দিন দিন জড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা জুয়া ও মাদকে। নেশার ফলে এই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে বেড়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড। মূলত মাদক ও জুয়াকে কেন্দ্র করে সিআরবি রেলওয়ে কোয়ার্টারের আশেপাশে থাকা বস্তিগুলোকে মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে এই মাদক কারবারিরা। সারদিনেই নতুন রেলষ্টেশন, পুরাতন রেলষ্টেশন এবং সিআরবি এলাকা ঘিরে জমজমাট থাকে মাদকের বাজার আর এই মাদকের বাজারে প্রধান ত্রেতা স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, বেকার যুবকরা।
চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, নগরীর ১৬টি থানায় মাদক গডফাদারদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে, আর এই সিন্ডিকেটের মাদক বিক্রি জন্য রয়েছে ৩৫৯ জন মাদক কারবারি। আর এই পুরো সিন্ডিকেটের সাথে মাদক ব্যবসা সমন্বয় করছে ১৬টি থানার কথিত ক্যাশিয়ারর ও পুলিশ ফাঁড়ি ও ক্যাশিয়ার।
চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চট্টগ্রামের ৫০টি স্পটে মাদকের কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মাদকের আখড়া নতুন রেলষ্টেশন, পুরাতন রেলষ্টেশন, সিআরবি চৌদ্দ জামতলা বস্তি। সবচেয়ে বড় মাদকের এই ব্যবসার প্রধান নিয়ন্ত্রন করে আলো আক্তার প্রকাশ খাল্লাম্মা। আলো প্রকাশ খাল্লামার শুধু মাদক ব্যবসায় নয় এই সব এলাকার ছিনতাইকারীদের প্রধান মুল হোতাও সে।
আলো আক্তার প্রকাশ খাল্লাম্মা নিযন্ত্রণে রযেছে নতুন রেলষ্টেশন, পুরাতন রেলষ্টেশন, চট্টগ্রাম রেলওয়ের সিআরবি, টাইগারপাস, কদমতলী রেলগেইট, বিআরটিসি, নিউমাকেট, জুবিলীরোড়, কাজীরদৈউরি, ওয়াসার মোড়, লালখান বাজার, রেলওয়ে চৌদ্দ জামতলা বস্তি, বয়লার কলোনি, বিআরটিসি এলাকা, এনায়েতবাজার, গোয়ালপাড়া, রেলওয়ে তুলাতলী বস্তি, বাটালী রোড, চৈতন্য গলি।
আলো আক্তার প্রকাশ খাল্লাম্মার মাদকের এই বিশাল ব্যবসা নিযন্ত্রণ করে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে পরিচিত মোঃ জুয়েল প্রকাশ কাঙ্গাল জুয়েল প্রকাশে পুলিশের সোস জুয়েল। মাদক বিক্রির জন্য এই জুয়েলের আবার রযেছে মহিলা ও পুরুষের শতাধিক বাহিনী, জুয়েলের এই বাহিনীর দেখা শুনা করে জনি ও শফিউল্লাহ।
এছাডাও চট্টগ্রাম রেলওয়ে সি আর বি আশেপাশে এলাকায় আলো প্রকাশ খাল্লামার মাদক বিক্রি নিয়ন্ত্রন করে আলতাফ ও বাবু। এনায়েত বাজার,গোয়াল পাড়া ও তুলাতলীর মাদক বিক্রি নিয়ন্ত্রন করে আলম,মানিক, তোহিদ ও জনি, রেলওয়ে ব্রয়লার এভিনিউ বস্তিতে অলি, খলিল ও শেফালী, রেলওয়ে চৌদ্দ জামতলা বস্তিতে,গোয়াল পাড়া আশেপাশে এলাকায়, বাটালী রোড,চৈতন্য গলি মিলন, জনি, রুবেল, রাজু,আজাদ, জলিল, তাজু, শুকতারা, মুন্নীসহ আধাশতাধিক মহিলা ও পুরুষ। আলো আক্তার প্রকাশ খাল্লাম্মার এই বিশাল বাহিনী দের নিয়ন্ত্রণ করেন আলো বড় বোন আয়শা ও পালিত পিতা সালে আহমেদ এবং রোকেয়া প্রকাশ মামী।।
বছরখানেক আগেও নিয়মিত পুলিশের অভিযান দেখা গেলেও এখন কোন এক অদৃশ্য ইশারায় অভিযান নেই বললেই চলে বলছেন এলাকাবাসী। এদিকে অত্র এলাকার জুয়ার বোড ও মাদকের স্পটগুলো রীতিমতো এলাকাবাসীর জন্য গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের অভিযান না থাকায় দিনের পর দিন বেড়েই চলছে এই অপরাধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক জুয়া, ছিনতাই যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, প্রশাসনের সাথে তাদের রয়েছে দারুন সখ্যতা। এলাকাবাসী আরো জানান নিয়মিত জুয়া ও মাদকের স্পটগুলো থেকে প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে থাকে নিয়ন্ত্রণকারীরা।
প্রশাসন যদি অতি দ্রুত এই মাদক সম্রাজ্ঞী এবং তার এই বিশাল মাদক বিক্রির বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে যুবসমাজ অতি দ্রুত তলিয়ে যাবে মাদকের কালো থাবায়।