দীর্ঘ দিন ধরে চট্টগ্রামে চলছে জন্মসনদ জালিয়াতি, সিটি করপোরেশনের (চসিক) জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির অভিযোগে জালিয়াত চক্রের চার সদস্যকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোস্তাকিম (২২), দেলোয়ার হোসাইন সাইমন (২৩), আব্দুর রহমান আরিফ (৩৫) ও ষোলো বছরের এক কিশোর। নগরের খুলশী থানাধীন ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আইডি হ্যাকিং এর ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলাটির বাদী ছিলেন ওয়ার্ডটির জন্মনিবন্ধন সহকারী মো. আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার মনজুর মোরশেদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত চক্রের সদস্য। এদের কাজ হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে জন্মনিবন্ধন প্রত্যাশীদের
ডাটা এন্ট্রি করে হ্যাকার গ্রুপের পরের পর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া। মূল হ্যাকার পরে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে একটি জাল জন্মসনদ প্রস্তুত করে পুনরায় চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠান। মূল হ্যাকার যিনি তাঁকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। অভিযানে জব্দকৃত বিভিন্ন ডিভাইস প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে হ্যাকিং এর অসংখ্য আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফেসবুকে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির বিষয়ে বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে। ওই গ্রুপে প্রবেশ করে যারা ভুয়া জন্মনিবন্ধন করতে আগ্রহের কথা জানিয়ে যোগাযোগ করেন তাঁদের চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া মাঠপর্যায়েও গ্রাহক সংগ্রহ করে থাকে চক্রের অন্যান্য সদস্যরা। এ পর্যন্ত চক্রটি ৫ হাজারের বেশি ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ সৃজন ও বিতরণ করেছে বলে জানতে পেরেছি।
তাদের মতো সারাদেশ আরও একাধিক চক্র ছড়িয়ে রয়েছে। একেকটি চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এডিসি আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত চারটি সিপিইউ, তিনটি মনিটর, একটি স্ক্যানার দুটি প্রিন্টার এবং চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জালিায়াতি কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ইতোমধ্যে এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ হাজারে বেশি ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করেছে। এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।