চট্টগ্রামে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়া তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম তেজগাঁও থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার সাজ্জাদ চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার শিকারপুর এলাকার মো. জামালের ছেলে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সিএমপি নিশ্চিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ঢাকায় অবস্থান করছে। এরপরই সিএমপির একটি টিম ঢাকায় তাকে অনুসরণ করতে থাকে।
শনিবার বিকালে বসুন্ধরা সিটিতে শপিং করার সময় সিএমপি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, পুলিশের বিশেষ টিম বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স এলাকায় সাজ্জাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায়।
অভিযানে গ্রেপ্তার হয় সাজ্জাদ। পরে তাকে থানায় নেওয়া হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে চট্টগ্রাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে জানান এ কর্মকর্তা।
পুলিশের তথ্যানুসারে, ছোট সাজ্জাদ আরেক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। তার বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা আছে।
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। একই বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাজ্জাদের বেপরোয়া হয়ে উঠে।
গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দুজনকে হত্যা করা হয়।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার কালারপোল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। ওই ঘটনার একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এরপর ৪ ডিসেম্বর নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি ডাকাতির প্রস্ততির সময় তার ছয় সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ২৮ জানুয়ারি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসিকে হুমকি দেয় সাজ্জাদ। ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘ওসি আরিফ দেশের যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে আমি ধরে ন্যাংটা করে পেটাব।
ওসি আরিফ থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার স্ত্রীকে আটক করে জেলে নিয়ে গেছে। তাকে আমি ছাড়ব না। পুলিশ না হলে তাকে অনেক আগেই মারধর করতাম। পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা করি বলেই চুপ করে আছি।’
এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সিএমপির ডিসি (উত্তর) আমিরুল ইসলাম জানান, ছোট সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তাতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।