চকরিয়া প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে অপহরণ করা হয়ছে রাশিকুল ইসলাম (১৫) নামের ৭ম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রকে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাসহ তিন অপহরণকারীকে আটক করে র্যাব।
জানা যায়, অপহরণের পরই তাকে আরেক চক্রের কাছে বিক্রয় করে দেওয়া হয়। চক্রটিও অপহরণকারীকে মিয়ানমারে পাচার করে দেয়। পাচারের পরও রাশিকুলের পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা।
২ মার্চ (শনিবার) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে এই অভিযান চালায় র্যাব।
র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী সিএসপি নিউজকে জানায়, কক্সবাজার সদরের নাছিমা ইয়াসমিন নামে এক ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া তার বড় ছেলে রাশিকুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে ছুটিতে বাড়ি এসে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ছেলেকে নিকটতম আত্মীস্বজন ও সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানায়, রাশিকুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়।
মুক্তিপণ না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক একাধিক মোবাইল নম্বরে অপহরণকারীদের পর্যায়ক্রমে একাধিকবারে সর্বমোট দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয়ার পরও পুনরায় তারা আরো দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী এ বিষয়ে র্যাব-১৫ এর নিকট অভিযোগ করেন। এছাড়াও এ সংক্রান্তে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।
যার ধারাবাহিকতায় ২ মার্চ র্যাব-১৫, সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি টিম কক্সবাজারের উখিয়ার থাইনখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের মূলহোতা দুই এফডিএমএনসহ তিনজন অপহরণকারীকে আটক করা হয়।
আটক তিন অপহরণকারীরা হলেন, উখিয়া ক্যাম্প-১২ এর ব্লক-জে/৭ এলাকার আলী হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৩৪), থাইনখালী ক্যাম্প-১২ এর ব্লক-এইচ/৪ বাসিন্দা মৃত আবুল খায়েরের ছেলে আমিন উল্ল্যাহ (১৯) ও সদর উপজেলার ঝিলংজা দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. তারেক (১৮)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটক মো. তারেক অপহৃত ভিকটিম রাশিকুল ইসলামকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অপহরণপূর্বক উখিয়ার থ্যাংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আটককৃতদের পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমকে সিএনজি করে টেকনাফে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রটির অপর এক সদস্যের নিকট হন্তান্তর করে। পরবর্তীতে তাকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে পাচার করে মর্মে স্বীকার করে।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ আটকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
সিএসপি/বিআরসি