রায়হান সিকদার,লোহাগাড়া(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের একদম শেষ সীমানায় দুর্গম জনপথে প্রতিষ্ঠিত রাজঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার কার্যক্রম ঘুরে দাঁড়িয়েছে।অতীতের ন্যায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৩৭ সালে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের খয়রারি পাড়া এলাকায় রাজঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামকরণে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেকাল থেকে স্কুলের পাঠদান ও শিক্ষার কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০২৩ সালে জুলাই দিকে এ বিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২জন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিল ৫জন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা সৃষ্ঠি হয়। পরবর্তীতে তৎকালীন উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক এবং বর্তমান সহকারি শিক্ষা অফিসার এসএম মনির উদ্দিনের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের কে স্কুলমুখী করার জন্য অভিভাবক,এলাকার মুরুব্বী, ইমাম ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন। স্কুলের মাঠেও একটি উঠান বৈঠক করেন তারা।জানা যায়, স্কুলটির এক কিলোমিটারের ভিতরে চরম্বা রাজঘাটা আবদুস সমদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নোয়ারবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৫/৬টির মত নূরানী মাদ্রাসাও রয়েছে। ২০২৪সালে জানুয়ারি মাসে এসে শিক্ষার্থীদের রেজিঃ খাতার তথ্যপ্রাপ্ত মতে বর্তমানে ৬৪জন শিক্ষার্থী রয়েছে। একজন শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা সংখ্যা ৪জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা হল যথাক্রমে গৌতম দত্ত, জয়নাল আবেদিন মাসুদ, নাছিমা আকতার, হাফছা খাঁতুন। বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গৌতম দত্ত।স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ কালু মিয়া জানান, এ বিদ্যালয়ে গত বছরে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম ছিল।গ্রামের লোকজন অবহেলিত।প্রায় এলাকার লোকজন কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। সচেতন হলে আরও বাড়বে।শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ আবদুল খালেক জানান, গত বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম দেখেছি। এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সবটাতে তো আর পড়ানো সম্ভব নয়।আমাদের গ্রামের মানুষ ক্ষেত-খামার করে বসবাস করে। আমরা কৃষি কাজ করি। তাই সন্তানদের যেকোন একটিতে ভর্তি করিয়ে দিই।বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌতম দত্ত জানান, এ বিদ্যালয়ের পার্শ্বে আরও দুটি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। যার কারণে আমরা শিক্ষার্থী কম পেয়ে থাকি। গত বছরের তুলনায় এবারে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৪জন। আমরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে স্কুলমূখী করার জন্য,প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।তিনি আরও জানান,এলাকাটি অনেক অবহেলিত।দুর্গম এলাকা। সন্তানের পড়ালেখার বিষয়ে অভিভাবকরা সচেতন কম। আমরা আশা করছি,ফেব্রুআরির মধ্যে এ বিদ্যালয়ে আরও শিক্ষার্থীকে স্কুলমুখী করতে পারবো।লোহাগাড়া উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার এসএম মনির উদ্দিন জানান, শিক্ষার কার্যক্রমকে বেগবান করতে আমরা এলাকায় কয়েকবার উঠান বৈঠক করেছি। স্কুলমুখী করতে জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিমও করেছি। আশা করছি শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার কার্যক্রম এগিয়ে যাবে।