প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ২০০৮-এর নির্বাচন শেষে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর টানা ২০২২ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজ বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। না হলে এত উন্নতি হতো না। আমরা খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই যথেষ্ট সাফল্য আনতে পেরেছি। আমাদের সময় সব দলই কিন্তু তাদের দল করার সুযোগ পাচ্ছে। সে ব্যবস্থাটা আমরা দিয়েছি।’
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি যখন জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করে, তারপর থেকে দেশে হত্যা, খুন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং– এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। এটা আওয়ামী লীগের কথা নয়, এটা আমেরিকায় ধরা পড়েছে। সেখান থেকে দেশে লোক এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করি। নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে, সেটা কিন্তু আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। ২০০১-এর নির্বাচন অথবা মাগুরা, ঢাকা-১০-এর উপনির্বাচনের কথা যদি কেউ স্মরণ করে, তাহলে বিএনপির আমলে নির্বাচনের নামে কী হতো, সেটা ওইটুকুই যথেষ্ট, যদি দেখেন। কথাই ছিল ‘১০টা হোন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’। ভোটের বাক্সে সিল মারা থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম হতো। তার জন্য আমরা স্বচ্ছ ভোটার বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণযন করি। কারণ, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে তালিকা করেছিল ২০০৬-এ নির্বাচন করতে বিএনপি। অবশ্য তাদের মুখে এখন খুব গণতন্ত্রের কথা শোনা যায়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে যখন নির্বাচনী ইশতেহারে আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দিয়েছিলাম, তখন সবাই হাসাহাসি করেছিল। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই তো সোশ্যাল মিডিয়ায় ইচ্ছামতো বলতে পারছে। বাংলাদেশে একটি টেলিভিশন ও রেডিও (স্টেশন) ছিল সরকারি। আওয়ামী লীগের আমলে অনেকগুলো রেডিও ও টেলিভিশন করে দিয়েছি।’
বৈদেশি মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়নেই রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে। এখনও পাঁচ মাসের ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে। যারা বলেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? কেন খরচ হচ্ছে? তাদের বলছি: রিজার্ভের টাকা গেছে গম, ভুট্টা, ভোজ্যতেলসহ মানুষের খাদ্য কেনায়, সার কেনায়, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে আমাদের আমদানি হয়নি, কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, কোনো রকম খরচ ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা, প্রবাসে যারা… যেহেতু কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, হুন্ডি ব্যবসাও ছিল না, একেবারে সরকারিভাবে সব টাকা এসেছে, যার ফলে আমাদের ভালো ফান্ড আসে। যেখানে বিএনপির আমলে ’৯১ থেকে ‘৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। যেটা ৩ মাসের খাবার আমদানি করারও পয়সা হতো না। সেই অবস্থায় আমি সরকারে আসি। তখন আমরা কিছু উদ্যোগ নিই। তখন থেকে রিজার্ভ আমরা বাড়াতে শুরু করি। সেই থেকে রিজার্ভ আমরা বাড়িয়েছি। ২০০৮-এ যখন আসি, তখনও পাঁচ বিলিয়নের বেশি ছিল না। সেই ৫ থেকে ৪৮ বিলিয়নে তুলতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম। তাছাড়া আমাদের যে লোন, বাংলাদেশ কোনোদিন ডিফল্টার হয়নি। আমরা সময়মতো লোন পরিশোধ করি।’