সিএসপি নিউজ : আগামী ৯ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে দাবি মানা না হলে ১০ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা লক আউটের মাধ্যমে মহাসড়কে ভারীযান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে ১১ দফার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ফ্লাটবেড ওনার্স এসোসিয়েশন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন এসোসিয়েশনের মালিকরা। দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে – সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বাতিল অথবা সাংঘর্ষিক ধারা উপধারাগুলো সংশোধন, প্রাইম মুভার ট্রেইলার ও ফ্ল্যাটবেড গাড়ির ওজন ও মাইলের ভিত্তিতে ভাড়া নির্ধারণ, আগের প্রাইম মুভার ও ট্রেইলারগুলো বিআরটিএ’র একই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা এবং ২০ ফুট কন্টেইনারবাহী গাড়ির নাম ফ্লাটবেড উল্লেখ করা, অতিরিক্ত চাকা সংযোজন এবং সেমি লোবেড, লো-বেড ও গাড়ির ধরণ পরিবর্তনের নামে মামলা ও পুলিশী হয়রানি বন্ধ, ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিটসহ বিভিন্ন করের ওপর আরোপতি ভ্যাট ও অন্যান্য ফি প্রত্যাহার করে একই নথিতে আনা এবং অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন। এসময় তিনি বলেন, সড়ক পরিবহণের ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিটসহ বিভিন্ন করের ওপর আরোপিত ভ্যাট ও ফি প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি নিয়ে আমাদের আককের এ সংবাদ সম্মেলন। আমাদের ১১ দফা দাবি ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূরণ করা না হলে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা মহাসড়কে ভারীযান প্রাইম মুভার, ফ্লাটবেড, লো বেড চলাচল বন্ধ রাখা হবে। চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরের ৯৫ ভাগ কার্যক্রম আমাদের এ প্রাইম মুভার ট্রেইলার, ফ্লাটবেড, লো-বেড ও সেমি লো-বেড গাড়ির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। করোনা মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মতো বিভিন্ন প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দিয়ে দেশ, জনগণ ও সরকারের পাশে দাঁড়াতে আমরা এক মুহূর্তে পিছপা হইনি। তারপরও আমরা বরাবরের মতোই সরকারের কাছ থেকে বঞ্চনা, অবহেলা, অন্যায়-অবিচারের শিকার। তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যবসা ও জীবন জীবিকা আজ ধ্বংসের পর্যায়ে। ২০১১ সালে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ণ করে এবং ২০১৫ সালে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিগত সরকারের কিছু অসাধু ব্যক্তি জরিমানার নামে অসহনীয় চাঁদাবাজী শুরু করে। এ কারণে ২০১৬ সালে সাত দফা দাবিতে টানা পাঁচ দিন প্রাইম মুভার ট্রেইলার চলাচল বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছিল।
এ প্রেক্ষিতে আন্তঃ মন্ত্রনালয়ের সভায় সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদস্থদের উপস্থিতিতে প্রাইম মুভারসহ ভারি গাড়িগুলোতে অতিরিক্ত চাকা সংযোজন করে সেতু, মহাসড়ক রক্ষার পরিকল্পনা এবং প্রাইম মুভার ও ট্রেইলরকে একই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার আইন সংশোধন করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এ প্রেক্ষিতে প্রাইম মুভার ও ট্রেইলারের একই রেজিস্ট্রেশন নতুন গুলোর বেলায় কার্যকর হলেও আগে পাঁচ হাজারের অধিক প্রাইম মুভারকে এখনও একই আওতায় আনা হয়নি। মৌখিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত চাকা সংযোজন ও ফ্লাটবেড নামে মামলা দেয়া বন্ধ থাকলেও সরকারের পট পরিবর্তনের পর সমগ্র দেশে অতিরিক্ত চাকা ও ফ্লাটবেড নামে পুলিশী মামলা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া না হলে পণ্য পরিবহন সেক্টর অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গত ৮ ডিসেম্বর আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে ১১ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেছিলাম। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
তাই আমরা আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের ১১ দফা দাবি পূরণের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আবু সালেহ জুয়েল, কার্য- নির্বাহী সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সহসভাপতি মোরশেদ হোসেন নিজামী, সাহাব উদ্দিন রুবেল, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান রাজু, ইসমাইল হোসেন, অর্থ সম্পাদক খোরশীদ আলম, দপ্তর সম্পাদক হাসান মুরাদ বাদশা, বন্দর বিষয়ক সম্পাদক ইউনুচ আজাদ ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ফকরুল ইসলাম লিটন।