ইয়াছিন আরাফাত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলে গত ২০ ডিসেম্বর একটি বিড়ালকে পিটিয়ে ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। একই সাথে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ও করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিড়াল হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছেন। তবে কে বা কারা বিড়ালটিকে হত্যা করেছে তা এখনো জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের হাতে অযাচিত প্রাণী হত্যা বন্ধ করুন আওয়াজ তুলুন’, ‘এ নিষ্ঠুর নৃশংস, অমানবিক ও বর্বর হত্যার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষ শাস্তির দাবি চাই লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী জনি রায় বলেন, বিড়ালটি হত্যার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল। পরে জানতে পেরে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছি।
এছাড়া সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কাজ না হয়, সেজন্য মূল অপরাধীদের শাস্তি আওতায় আনতে হবে।
বিড়াল হত্যার দীর্ঘদিন পর সবার সামনে আসে বিষয়টি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার ছবি ও বর্ণনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে দাবি করা হয় এ এফ রহমান হলের আবদুল্লাহ ফারুকি নামের শিক্ষার্থী বর্বরভাবে হত্যা করেছেন বিড়ালটি। ওই পোস্টে বলা হয় আবদুল্লাহ ফারুকি রাজনীতির সাথে জড়িত তাই বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রতিবাদ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে বিড়ালটির মালিক ও ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ ফারুকি বলেন, গত ১৫,১৬ দিন আগে সকালবেলা আমার রুমের সামনে আমার বিড়ালের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখি। যেটাকে আমি আমার হলে সিনিয়র ফাইয়াজ ভাই এর কাছ থেকে নিয়েছিলাম। যাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা করেছে কেউ।
তিনি আরো বলেন, কেউ আমার সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে এরকম করছে। আমি চাই এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক কারণ এই ঘটনায় আমি নিজেও অত্যন্ত ব্যাথিত।
বিড়াল হত্যা ও হত্যাকারী নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন হত্যার এতো দিন পর বিষয়টি সামনে এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবদুল্লাহ ফারুকির উপর সরাসরি দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটা ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, মানুষ এতো নিষ্ঠুর কিভাবে হয়। আমরা প্রাণী হত্যার বিচার চাই। যেই এই জঘন্য কাজ করেছে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, এটা দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতটা অমানবিক হতে পারে না। ঘটনাটি খতিয়ে দেখব। নির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।